সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার সারোয়ার হোসেন : রাজশাহীর তানোরে ভেজাল ও নিম্নমাণের কীটনাশকে বাজার সয়লাব হয়ে উঠেছে। মানহীন এসব কীটনাশক জমিতে দফায় দফায় প্রয়োগ করেও সুফল মিলছে না। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের (এসএএও) পরামর্শও পাচ্ছেন ন। ভেজাল ঠেকাতেও কৃষি বিভাগের কোনো নজরদারিও নাই, নাই ভ্রাম্যমান অভিযান।জানা গেছে,, কীটনাশক আসল না নকল সে সম্পর্কে কৃষকের কোনো ধারণা নাই। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কীটনাশক ব্যবসায়ীরা নিম্নমাণের মানহীন কীটনাশকের রমরমা বাণিজ্য করে কৃষকের পকেট কাটছে। কীটনাশক ভেজাল ও নিম্নমানের হওয়ায় জমি থেকে পোকা সরানো যাচ্ছে না। খেতের মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকা সারাতে অনেক কৃষককে এরই মধ্যে জমিতে ৩ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়েছে। আগামিতে পচন ও কারেন্ট পোকা রোধে কয়েকদফা স্প্রে দিতে হবে। এতে ধানের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। ফলন বিপর্যয়েরও আশঙ্কা রয়েছে। তারা বলেন, কৃষকদের এখন চরম সংকটময় অবস্থা চলছে। এ সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তেমন কোন সহায়তা ও পরামর্শ পাচ্ছেন না। অধিকাংশ সময় মাঠে কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না বলেও দাবি করেন কৃষকেরা।
জানা গেছে, বিগত ২০২০ সালের ৫মে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার কীটনাশক ব্যবসায়ী মেসার্স সুফিয়া টেড্রার্সের স্বত্তাধিকারী সামসুজ্জামান ডালিমের পরামর্শে তার দোকান থেকে কীটনাশক কিনে পাঁচন্দর গ্রামের বাসিন্দা সারুদ্দি সরকারের পুত্র কৃষক মাসুদ রানা তার সাড়ে তিন বিঘা বোরো খেতে শীষকাটা রোগ প্রতিরোধে স্প্রে করেন। কিন্ত্ত ৭মে মাসুদ রানা জমিতে গিয়ে দেখেন তার জমির পুরো ধান গাছ পুড়ে খড়ে পরিনত হয়েছে। এতে তার প্রায় এক লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।গত মৌসুমে উপজেলার সরনজাই ইউপির সরনজাই খাঁপাড়া গ্রামের মৃত রহমান শাহ্র পুত্র দারেস আলী ইউপির মণ্ডলপাড়া বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী মিজানের পরামর্শে তার দোকান থেকে কয়েক প্রকার কীটনাশক কিনে ৮ বিঘা আমণখেতে স্প্রে করেন। কিন্ত্ত এসব কীটনাশক স্প্রে করার পরপরই ধান গাছের পাতা পুড়ে ঝলসে যায়। এতে তার প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়। কিন্ত্ত কৃষি বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এদিকে উপজেলার কামারগাঁ ইউপির মাদারীপুর বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী ময়েজ, কামারগাঁ বাজারের সুমন ও সজিব দীর্ঘদিন যাবত শ্যামপুর,ভিমনগর ওকেশরহাট থেকে নিম্নমাণের কীটনাশক এনে বিক্রি করছে। কেশরহাটের জনৈক মোখলেছুর ও শ্যামপুরের জনৈক মহাসিন তাদের কাছে এসব মাল সরবরাহ করছে।
বিগত ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল বুধবার মাদারীপুর বাজারের মেসার্স সিজান ট্রেডার্স থেকে মাদারল্যান্ড কোম্পানীর বিভিন্ন প্রকারের ৬ কার্টুন নিম্নমাণের কীটনাশক জব্দ করেন উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা। কিন্ত্ত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ বা জব্দকৃত কীটনাশক অফিসে না এনে গোপণে তড়িঘড়ি ব্যস্ত রাস্তার পাশে পুড়িয়ে দিয়ে ব্যবসায়ীকে দায় মুক্তি দেয়া হয়। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোনে কল গ্রহণ না করায় তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
Copyright @ 2024 Jonotarsomoy24.com । জনতার সময়২৪. All rights reserved
Leave a Reply